কণ্ঠ এবং যন্ত্রসঙ্গীতে তবলার সঙ্গত করা

আজক আমাদের আলোচনার বিষয় কণ্ঠ এবং যন্ত্রসঙ্গীতে তবলার সঙ্গত করা। সঙ্গত করার অর্থ হচ্ছে সঙ্গ দেয়া। কাজেই একজন তব‌লিয়া সঙ্গীত সৃষ্টির লক্ষ্যে যে অনবদ্য কাজ‌টি করেন সে‌টিই হচ্ছে সঙ্গত।

কণ্ঠ এবং যন্ত্রসঙ্গীতে তবলার সঙ্গত করা

 

কণ্ঠ এবং যন্ত্রসঙ্গীতে তবলার সঙ্গত করা

 

‘সংগত’ অর্থে ‘সমগত’ । কণ্ঠসঙ্গীত এবং যন্ত্রসঙ্গীতে গতি অনুযায়ী তবলা সঙ্গতের গতি হওয়া দরকার। কণ্ঠসঙ্গীত বা যন্ত্রসঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গতের সময় তবলা শিল্পীকে একথা সর্বদা মনে রাখতে হবে, গায়ক বা বাদক যেন অযথা তাঁদের সঙ্গীত পরিবেশনে ব্যাহত না হন । অনেক তবলা শিল্পী নিজের গুণপণা প্রদর্শন করবার অভিপ্রায়ে অসঙ্গত এবং নিষ্প্রয়োজনভাবে দীর্ঘ ‘বোল’ বাজিয়ে থাকেন।

এতে সঙ্গীতের আসল উদ্দেশ্য বাহত হয়। সঙ্গীতের মূল উদ্দেশ্য হলো রসসৃষ্টি করা। এই রসসৃষ্টি ব্যাহত হতে বাধ্য, যদি তবলা শিল্পী, গায়ক বা বাদকের সঙ্গীত পরিবেশন ক্ষেত্রে পূর্ণ সহযোগিতা না করেন। উদাহরণস্বরূপ আমার গুরু, ওস্তাদ মসীদ খান সাহেবের সুযোগ্য পুত্র ওস্তাদ কেরাম‍ খান সাহেবের কথা ধরা যাক। গোটা ভারতে এমন সঙ্গতকার আর দ্বিতীয়টা পাওয়া যায় না। তিনি কখনো কোনো গায়ক বা বাদককে ছাপিয়ে সঙ্গত করেন না।

যেখানে যেটুকু প্রয়োজন, ঠিক সেখানে মাপ মতো ততটুকুই বোল-বাণী প্রয়োগ করেন। তবলায় জবাবী সঙ্গত বলে একটা কথা আছে।

 

আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন

 

কণ্ঠসঙ্গীতের চেয়ে যন্ত্রসঙ্গীতেই এর পরিধি বিস্তৃত ! জবাবী-সঙ্গতেও দেখা গেছে-ওস্তাদ কেরামৎ খান সাহেবের জুড়ি নেই ৷ জবাবী সঙ্গত খুবই কঠিন। বিশেষ করে “৩০” জাতীয় ( তারের যন্ত্র) বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সঙ্গত করাটা নানা রকম ছন্দের দোল-বাণী জানার উপর নির্ভর করে ।

অবশ্য এট। ঠিক যে, সেতার, স্বরোদ, প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রে উত্থিত সমস্ত প্রকার ছন্দের এবং লয়কারীর উপযুক্ত প্রত্যুত্তর বা জবাব ভবলায় দেওয়া যায় না। আবার তবলায় যে প্রকার ছন্দের এবং লয়কারী দেখানো হয়, তারও সমস্ত প্রকার উপযুক্ত প্রত্যুত্তর সেতার, স্বরোদে দেখানো সম্ভব নয় । তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই জবাব দেওয়া সম্ভব হয় । সাথ-সঙ্গত বলেও একটা কথা আছে । এটা কণ্ঠসঙ্গীতেও চলে, আবার যন্ত্রসঙ্গীতেও চলে।

তবে সাথ সঙ্গত করতে হলে ছ’ পক্ষকে লয়ে এবং তালে অত্যন্ত সজাগ থাকতে হয়। একটু এদিক-ওদিক হলেই লয়ে ও ডোরায় ঠিক থাকলেও বেতালা হতে হয় । সাধারণত: ছোট ছোট কাজগুলির সাথ-সঙ্গত হয়।

 

কণ্ঠ এবং যন্ত্রসঙ্গীতে তবলার সঙ্গত করার

 

বড় কাজের সঙ্গে সাথ-সঙ্গত ( চিমালয়ে দু-তিন আর্দ। ঘুরে আস। ) করাটা বিপদ জনক। এটা পারতপক্ষে না করাই ভালো ।

 

আরও দেখুন :

Leave a Comment